বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব করে ভারতের গভীর উদ্বেগ
বাংলাদেশে একটি গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে তীব্র ভারতবিরোধী প্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে নয়াদিল্লি। একই সঙ্গে এসব বক্তব্যকে সরাসরি ও স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত সরকার।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে নয়াদিল্লির সাউথ ব্লকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহকে তলব করা হয়। বৈঠকে বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়েও গভীর উদ্বেগ জানায় ভারত।
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে চলা বৈঠকে বাংলাদেশের বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি, বিশেষ করে ঢাকায় ভারতীয় মিশন ঘিরে সম্ভাব্য ঝুঁকির বিষয়টি হাইকমিশনারকে অবহিত করা হয়।
বৈঠক শেষে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশের কিছু চরমপন্থি গোষ্ঠীর কার্যকলাপ নিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে। এসব গোষ্ঠী ভারতীয় হাইকমিশনের আশপাশে নিরাপত্তা সংকট সৃষ্টির ঘোষণা দিয়েছে, যা ভারত অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সাম্প্রতিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে বিভ্রান্তিকর ও ভিত্তিহীন ন্যারেটিভ ছড়ানোর চেষ্টা চলছে, যা ভারত সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করে। একইসঙ্গে অভিযোগ করা হয়, এসব ঘটনার বিষয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এখনো পূর্ণাঙ্গ তদন্ত বা বিশ্বাসযোগ্য তথ্য শেয়ার করেনি।
তবে ভারত স্পষ্ট করেছে, বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে ঘনিষ্ঠ ও বন্ধুত্বপূর্ণ। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে দুই দেশের সম্পর্ক বিভিন্ন উন্নয়নমূলক উদ্যোগ ও মানুষে-মানুষে যোগাযোগের মাধ্যমে আরও দৃঢ় হয়েছে। ভারত বাংলাদেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং অবাধ ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের পক্ষেই রয়েছে।
বিবৃতির শেষাংশে ভিয়েনা কনভেনশনের আলোকে বাংলাদেশে অবস্থানরত সব বিদেশি কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রত্যাশা জানায় নয়াদিল্লি। একই সঙ্গে ঢাকায় ‘মার্চ টু ইন্ডিয়ান হাইকমিশন’ কর্মসূচি ঘোষণার বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে, গত ১৪ ডিসেম্বর ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করে বাংলাদেশ সরকার। সে সময় ভারতে অবস্থানরত পলাতক শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য এবং বাংলাদেশবিরোধী কর্মকাণ্ড নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানানো হয়।

Please share your comment: