মোসাদের সদর দপ্তরে ইরানের হামলায় ৩৬ জন নিহত হয়েছিল: তেহরান
ইসরায়েলের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সদর দপ্তরে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৩৬ জন নিহত হয়েছিলেন বলে দাবি করেছে তেহরান। রোববার (৭ ডিসেম্বর) ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী-মোহাম্মদ নায়েনি এ দাবি করেন।
টানা ১২ দিনের যুদ্ধে ইসরায়েলজুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও এর পূর্ণাঙ্গ চিত্র প্রকাশ্যে আসেনি। অভিযোগ রয়েছে, ক্ষয়ক্ষতির তথ্য প্রকাশে ইসরায়েলি সরকার গণমাধ্যমের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করেছিল। সামরিক বাহিনী যেটুকু তথ্য প্রকাশ করেছে, মূলত সেখান থেকেই পরিস্থিতি আঁচ করা গেছে।
আইআরজিসির মুখপাত্র বলেন, তেহরানের একটি জ্বালানি ডিপোতে ইসরায়েলের হামলার জবাবে মাত্র পাঁচ ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি আলাদা অভিযানে হাইফার তেল শোধনাগারে হামলা চালায় ইরান। এর ফলে ওই গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাটি কার্যত অচল হয়ে পড়ে।
তিনি আরও বলেন, ইসরায়েল যখন ইরানের একটি গোয়েন্দা কেন্দ্রে হামলা চালায়, তার প্রতিক্রিয়ায় ইরান মোসাদের একটি স্থাপনায় হামলা করে। ওই হামলায় শত্রুপক্ষের ৩৬ জন নিহত হন বলে দাবি করেন নায়েনি।
নায়েনি জানান, সংঘাত শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইরানের ‘ট্রু প্রমিজ–৩’ অভিযান শুরু হয়। তিনি এটিকে ইলেকট্রনিক যুদ্ধ, সাইবার অপারেশন, ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন আক্রমণের সমন্বয়ে পরিচালিত একটি বহুস্তরীয় অভিযান হিসেবে বর্ণনা করেন।
তার ভাষ্য অনুযায়ী, পূর্ণ গোয়েন্দা প্রস্তুতি এবং বিশাল তথ্যভাণ্ডার নিয়ে ইরান এ যুদ্ধে প্রবেশ করেছিল।
তিনি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ইসরায়েল পুরো অঞ্চলের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করেও ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়েছে।
সংঘাত চলাকালে ইরান প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০টি সাইবার হামলার মুখে পড়ে বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি ইরান নিজস্ব সাইবার অভিযানও পরিচালনা করেছে। নায়েনির মতে, এই সাইবার ও গোয়েন্দা যুদ্ধের অনেক তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য, ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে পারমাণবিক আলোচনার মধ্যেই গত ১৩ জুন ইরান লক্ষ্য করে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েল। এতে ১২ দিনব্যাপী যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে এবং ইরানে অন্তত ১ হাজার ৬৪ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে সামরিক কর্মকর্তা, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সাধারণ নাগরিকও ছিলেন।
পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে, যখন আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। জবাবে ইরান দখলকৃত অঞ্চলগুলোর পাশাপাশি পশ্চিম এশিয়ায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম সামরিক ঘাঁটি কাতারের আল-উদেইদে আঘাত হানে।
এরপর ২৪ জুনের পর থেকে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ হয় বলে জানায় তেহরান।

Please share your comment: