ভারতের নসিহতের দরকার নেই: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের দেওয়া উপদেশ সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ভালো ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে। এ অবস্থায় ভারতের নসিহত দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
১৭ ডিসেম্বর বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহকে তলব করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
এ বিষয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের কাছ থেকে এমন বক্তব্য শোনা যায়নি। এখন দেওয়া নসিহত গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি বলেন, ভারত চাইলে শেখ হাসিনাকে ভারতে বসে রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত রাখতে পারে। পাশের দেশে বসে এ ধরনের বক্তব্য বাংলাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে।
তিনি আরও বলেন, হাইকমিশনারকে তলব অপ্রত্যাশিত কিছু নয়। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এমনটা হয়ে থাকে। বাংলাদেশও অতীতে একই পদক্ষেপ নিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের শুরু থেকেই ভারতের সঙ্গে কিছুটা টানাপোড়েন থাকলেও বাংলাদেশ ‘গুড ওয়ার্কিং রিলেশন’ চেয়েছে।
ভারতের মিশনগুলোর নিরাপত্তা প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ভারতীয় হাইকমিশনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই সরকার প্রথম দিন থেকেই এমন পরিবেশ তৈরির কথা বলছে, যেখানে মানুষ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবে—যা গত ১৫ বছরে ছিল না। অতীতে প্রহসনমূলক নির্বাচন হলেও সে সময় ভারত কোনো মন্তব্য করেনি। এখন ভালো নির্বাচনের পথে এগোনোর মুহূর্তে উপদেশ দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্যান্য দেশের মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়েও আলোচনা চলছে, যা ভারতের অবস্থানের সঙ্গে এক নয়।
তারেক রহমানের দেশে ফেরা প্রসঙ্গে তৌহিদ হোসেন জানান, ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত তারেক রহমান কোনো ট্রাভেল ডকুমেন্ট চাননি। পাসপোর্ট নিয়ে দেশে এলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি জানবে।

Please share your comment: