শেখ হাসিনা ও কামালের মৃত্যুদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে ট্রাইব্যুনাল
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তিন বিচারপতির স্বাক্ষর শেষে বুধবার (২৬ নভেম্বর) রায়টি প্রকাশিত হয়। এর ফলে আজ থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে তাদের আপিল করতে হবে।
গত ১৭ নভেম্বর বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় ঘোষণা করা হয়। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। গণঅভ্যুত্থানকালীন হত্যাকাণ্ড ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংক্রান্ত এটিই প্রথম মামলার রায়।
মামলার দ্বিতীয় অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড এবং প্রথম অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায়ে বলা হয়, ড্রোন, হেলিকপ্টার ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে তিনি ‘সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটি’ বহন করেছেন। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল ও সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুন সেই নির্দেশ বাস্তবায়ন করেছেন—তাদের অপরাধও প্রমাণিত হয়েছে।
রায়ে উল্লেখ করা হয়, আন্দোলন দমনে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশনা সম্পর্কিত শেখ হাসিনার টেলিফোন কথোপকথন—ঢাবির সাবেক ভিসি অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল, সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে—ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপিত হয়েছে। বিচারপতি মজুমদার জানান, ৪৫৩ পৃষ্ঠার এই রায়টি ছয় খণ্ডে সাজানো।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষাপট, ঢাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন স্থানে—যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, বাড্ডা, সাভার, আশুলিয়া, রংপুরসহ—প্রাণঘাতী গুলি চালিয়ে হত্যার বিস্তারিত বর্ণনা রায়ে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আদালতে প্রদর্শিত অডিও-ভিডিও প্রমাণ, সাক্ষীদের বিবরণ এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে সংগৃহীত দৃশ্যমান তথ্য–উপাত্তও রায়ে তুলে ধরা হয়েছে।

Please share your comment: