স্পাই থ্রিলার ‘ধুরন্ধর’ নিয়ে কেন ক্ষুব্ধ পাকিস্তান?

বিনোদন ডেস্ক Published: 16 ডিসেম্বর 2025 22:12 পিএম

ছবি: সংগৃহীত

বলিউডের বড় বাজেটের সিনেমা মানেই জাতীয়তাবাদী আবেগ, রাজনৈতিক বার্তা আর প্রতিবেশী দেশকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপনের অভিযোগ—এই সমালোচনা নতুন নয়। রণবীর সিং অভিনীত স্পাই থ্রিলার ‘ধুরন্ধর’ সেই বিতর্ককে আবারও সামনে এনেছে। ভারতে বাণিজ্যিকভাবে সফল হলেও পাকিস্তানে সিনেমাটি তীব্র অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে।

সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া এই দীর্ঘ ক্রস-বর্ডার স্পাই ড্রামায় ভারত–পাকিস্তান উত্তেজনার পটভূমিতে গোয়েন্দা অভিযান, গ্যাংস্টার জগৎ ও সহিংসতার গল্প তুলে ধরা হয়েছে। গল্পে রণবীর সিংকে দেখা গেছে একজন ভারতীয় গুপ্তচরের চরিত্রে, যিনি করাচিতে ঢুকে সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক ধ্বংসের মিশনে নামেন।

পাকিস্তানি সমালোচকদের অভিযোগ, ছবিটি ইতিহাস ও বাস্তবতাকে বিকৃত করে উপস্থাপন করেছে। বিশেষ করে করাচি ও লিয়ারি এলাকার চিত্রায়ণকে তারা অবাস্তব ও অপমানজনক বলে মনে করছেন। সমাজবিজ্ঞানী নিদা কিরমানির মতে, সিনেমায় করাচিকে শুধুই সহিংসতা আর অপরাধের শহর হিসেবে দেখানো হয়েছে, যা শহরটির সংস্কৃতি, ভাষা ও সামাজিক বাস্তবতার সঙ্গে মিল নেই।

বিতর্ক আরও ঘনীভূত হয় যখন পাকিস্তান পিপলস পার্টির পক্ষ থেকে অভিযোগ ওঠে—সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছবি অনুমতি ছাড়াই ব্যবহার করা হয়েছে এবং রাজনৈতিক নেতাদের সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িয়ে দেখানো হয়েছে। এ নিয়ে করাচির আদালতে আইনি পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে।

ভারতের ভেতরেও কিছু চলচ্চিত্র বিশ্লেষক মনে করছেন, সিনেমাটি অতিরিক্ত জাতীয়তাবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে তৈরি। তাদের মতে, নির্মাতারা পাকিস্তানের বাস্তবতা সম্পর্কে সরাসরি অভিজ্ঞতা ছাড়াই একটি কল্পনানির্ভর, একমাত্রিক ছবি তুলে ধরেছেন—যা অনেকটা হলিউডে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোকে স্টেরিওটাইপভাবে দেখানোর মতো।

সমালোচকদের বড় অভিযোগ হলো, সাম্প্রতিক বলিউড সিনেমাগুলোতে মুসলিম চরিত্র ও প্রতিবেশী দেশগুলোকে প্রায়ই ‘শত্রু’ বা ‘সন্ত্রাসী’ রূপে দেখানো হচ্ছে। এতে শুধু রাজনৈতিক উত্তেজনাই বাড়ছে না, বরং দক্ষিণ এশিয়ায় সামাজিক বিভাজনও গভীর হচ্ছে।

যদিও নির্মাতারা দাবি করছেন, ধুরন্ধর সম্পূর্ণ কল্পকাহিনি। তবে বাস্তব হামলার অডিও, সংবাদ ফুটেজ ও সাম্প্রতিক ঘটনাবলির ব্যবহার সিনেমাটিকে আরও বিতর্কিত করে তুলেছে।

Please share your comment:

Related